আয়কর এবং রেমিটেন্স দুইটা ভিন্ন জিনিস। আয়কর মানে হইতাছে- সহজ ভাষাতে যেটা বুঝি বাংলাদেশে আপনার যে উপার্জন তার উপরে সরকারকে একটা নির্দিষ্ট পরিমান কর দেয়া যা দিয়ে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্টান বা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলে। বেসিক্যালি সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গুলো সাধারনত বিদেশী বা দাতা সংস্থার অর্থায়নে চলে যদিও সেই সকল বিদেশী বা দাতা সংস্থার কোন অর্থ কোথাও পুরোপুরি ভাবে কাজে লাগে কিনা তা এক সৃষ্টিকর্তাই জানে। এখন আপনি যে কর দিতাছেন আর পন্য কেনার জণ্য যে ভ্যাট দিতাছেন বা বসবাস করার জণ্য বা সরকারি সুবিধা ব্যবহার করার জন্য যে ট্যাক্স দিতাছেন তা দিয়েই সরকারি প্রতিষ্টানের কার্যক্রম চলে। যেমন বাংলাদেশের মানুষ যে ট্যাক্স বা কর দেয় তা দিয়ে সরকারের সরকারি এবং সামরিক বাহিণীর লোকজনদের( সেনাবাহিণী, নৌবাহিণী, বিমানবাহিণী এবং বাংলাদেশ পুলিশ কিংবা র্যাব, প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা- প্রত্যেক সচিবালয় বা মন্ত্রনালয়ের সচিব থেকে কর্মচারী পর্যন্ত, শিক্ষা খাত বা সরকারি/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে কর্মচারী পর্যন্ত, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত যে কোন প্রতিষ্টান, সকল পাবলিক প্রতিষ্টান) এদের বেতন ভাতাদি চলে। আমরা যখণ প্রথম ফুলটাইম ফ্রি ল্যান্সিং করে থাকি বা শুরু করে থাকি তখন বলা হয়েছিলো যে- যারা রেমিটেন্স আনে তাদের কে আয়কর দেবার দরকার নাই কারন রেমিটেন্স বাংলাদেশ সরকারের জন্য গর্বজনক, সারা বিশ্বের সাথে লেনাদেনাতে ব্যবহৃত হয়। যারা রেমিটেন্স আনে বা দেয় তারা বাংলাদেশের ১ নম্বর নাগরিক । এছাড়াও সাধারন জনগনের (দেশের বাহিরে যাবার জন্য ব্যাংক এনডোর্সমেন্ট বা দেশের সামগ্রিক ভোগ্য পন্য আমদানিতেও ব্যবহৃত হয়) বা আরো কিছু বিশেষ কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়।
যারা রেমিটেন্স আনে তাদের মধ্যে আছে গার্মেন্টস ওয়ার্কার রা, রপ্তানী, বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিক বা শ্রমিক সকল এবং বাংলাদেশী ফ্রি ল্যান্সার রা। বিগত কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশী ঠিক ঠাক মতো আইডি কার্ড না দেবার কারনে (নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ) বা অনলাইনের আইডি কার্ড বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গ্রহন না করাতে আমাদের দেশের ফ্রি ল্যান্সার রা তাদের বাবা বা মায়ের আইডি কার্ড ব্যবহার করতাছে এবং তারা তাদের ফ্রি ল্যান্সার একাউন্টেও তাদের বাবা বা মা বা অন্য কারো যাদের ভ্যালিড আইডি কার্ড আছে- তাদের ছবি বা ডিটেইলস ব্যবহার করতাছে। আপনি যদি তাদের ফ্রি ল্যান্সার একাউন্টে ঢুকেন তাহলে তাদের একাউন্টে অন্য কারো আইডি কার্ড দেখতে পারবেন। এখন আপনি যদি আপনার বাবার আইড কার্ড ডিটেইলস ব্যবহার করে থোকেন আর সে হিসাবে যদি আপনি আপনার বাবার নামে ফ্রি ল্যান্সার প্রোফাইল মেক করে থাকেন তাহলে তো সেই একাউন্ট থেকে আপনি যতো পরিমান ডলার উপার্জন করতাছেন তা বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্রাইভেট ব্যাংকে র ডে ডাটাবেজ লিখা আছে। মূলত রেমিটেন্সের সকল হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক রেখে দেয়। তাহলে রেমিটেন্স টি আপনার বাবা বা মা র নামে ইস্যু হইতাছে। তাহলে আপনার বাবা বা মা যে কর্মজীবি পুরুষ/মহিলা - উনি রেমিটেন্স ও দিতাছেন আবার আয়কর ও দিতাছেন তাহলে তো সরকারের কাছে দুই ধরনের হিসাব জমা হলো। একদিকে সরকার আপনার বাবার কাছ থেকে আয়কর নিতাছে বা ট্যাক্স নিতাছে আবার আরেকদিকে আপনার ব্যবহৃত ফ্রি ল্যান্সার প্রোফাইলে আপনার বাবার নাম দেখানোর কারনে সেটা আবার রেমিটেন্স ডিপার্টমেন্টেও দেখা যাইতাছে এবং আবার সরকার তাদেরকে ২% বোনাসও দিতাছে। এখণ আপনার বাবা মা যদি কর্ম ছেড়ে দেয় তাহলে সরকার আয়কর হারাবে আর যদি ফ্রি ল্যানসিং ছেড়ে দেন তাহলে তো সরকার রেমিটেন্স হারালো। (অনলাইনে এখন অসংখ্য প্রমান আছে যে বৃদ্ব বয়স্ক অনেক মানুষ মার্কেটপ্লেসে ফ্রি ল্যানসিং করতাছেন, মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইটে ও ডাটাবেজে আছে আবার সরকারের কাছে থাকা ডাটাবেজেও আছে)।
সরকারের অনেক দপ্তরে নিয়ম আছে যে- আপনি সরকারি/বেসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত/আধা সরকারি চাকুরী করাকালীণ সময়ে অণ্য কোন পেশায় নিজেকে ইনভলব করতে পারবেন না বা অনুমতি ছাড়া ইনভলব হতে পারবেন না। আবার অনেকে বেসরকারি অফিসেও একই কন্ডিশন দিয়ে থাকে চাকুরীর শুরুতে। তাহলে তো আপনার নামে রেমিটেন্স রেকর্ড থাকার কারনে আপনার বাব কিংবা মা চাকুরী হারাতে পারেন- কারন আপনি তো মার্কেটপ্লেসের মাধ্যেমে বৈদিশিক সরকারের কাছে নথিবদ্ব লাইক ইউএসএ বা অন্য যে কোন দেশ কারন আপনাকে তো (W-8TEEN FORM) ফিলাপ করতে হয় এবং আপনি একইসাথে দুই সরকারের কাজ করে যাইতাছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় বা সচিবালয়য়ের বা অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে । আবার আপনি আপনার বাবা কিংবা মায়ের ডিটেইলস ব্যবহার করার কারনে সরকারের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিণী যদি আপনার ফুল ডিটেইলস চেক করতে বসে আর আপনার বাবা মাকে কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে বা কিছু কাজ যদি করে দেখাতে বলে তখন কি আপনার মধ্যবয়স্ক বাবা কিংবা মা কি তা করে দেখাতে পারবে। তাহলে কি আপনি আইনগত জটিলতার দিকে ধাবিত হইতাছেন না? বর্তমানে প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় এই দেশে যারা রেমিটেন্স এনেছেন তাদেরকে ফ্রি ল্যান্সার আইডি কার্ড দেবার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্বান্ত নিয়েছে। এখন যে সকল বাবা কিংবা মা কিংবা বড় ভাইরা প্রাইভেট চাকুরীও করতাছেন আবার রেমিটেন্স রেকর্ড ্ও এনেছেন ফ্রি ল্যানসিং সেকসানে তারা নিশ্চয়ই একটা বেছে নিবেন। আপনার ছেলে কিংবা মেয়ে যদি ভুল করে থাকে তাহলে হয়তো সরকার আপনাকে জরিমানা ধরতে পারে যদি আপনি আপনার চাকুরী বা ব্যবসা টিকাইয়া রাখতে চান বা সরকার হয়তো আপনাকে শো কজ ও করতে পারে। যে কোন ফ্রি ল্যান্সার বাংলাদেশে রেমিটেন্স এনেছেন তার রেকর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আছে আর তার ডাটাবেজ ও দেয়া হয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে। আর যারা এখনো সঠিক তথ্য নিয়ে লেগে আছে তারা তো অতি পরিমান সৌভাগ্যবান। করোনার কারনে অনেক ফ্রি ল্যানসারই রেমিটেন্স আনতে পারতাছে না বিগত এক বছর যাবত তবে তারা তো আগে প্রচুর পরিমানে রেমিটেন্স এনেছেন। বেসিক্যালি ব্যাংক টু ব্যাংক ফরেন ট্রান্সফার/ ফরেন সুইফট ট্রানজেকশনে কে রেমিটেন্স হিসাবে অভিহিত করা হয়। হয়তো বাংলাদেশ সরকার কোনটাই করলো না - কিন্তু আপনার প্রফেশন বিবেচিত হবে দুইটা। আর আপনি ব্যক্তিগত জীবনে সরকারের ডাটাবেজে শতভাগ সৎ থাকলেন না।
আমার মনে হয় - এই থেমে থাকা পরিস্থিতিতে আপনি আমি সবাই এই জটিলতাটা নিয়ে ভাবতে পারি যে এইটা কি হবে বা ব্যাপারটার ডিটেইলস কি হবে ? তবে আরো একটা ব্যাপার মাথাতে রাখতে হবে- সম্প্রতি মালিকানা পরিবর্তন হওয়া পাইওনিয়ার- আমেরিকা থেকে ইউরোপিয়ান কোম্পানীর কাছে- তারাই প্রধান রেমিটেন্স সাপ্লায়ার (পাইওনিয়ার সাধারনত দুইটা ব্যাংক ব্যবহার করে মেইনলি - একটা ব্যাংক অফ আমেরিকা আরেকটা জার্মানীর ব্যাংক। এছাড়াও আরো ২/৩ টা দেশের ব্যাংক ডিটেিইলস ব্যবহার করে থাকে)। তাছাড়া সকল ধরনের রেমিটেন্স সাপ্লায়ার কোম্পানীর কাছে রেমিটেন্স রেকর্ড থাকার কারনে সচরাচর বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যানে বিপুল সংখ্যক মানুষের ফেইক ডাটাবেজ তৈরী হওয়াতে তাদেরকেও গুনতে হতে পারে বড় অংকের জরিমানা বা বাংলাদেশ ও হারাতে পারে উল্লেখযোগ্য পরিমান বৈদিশিক বরাদ্দ। এক কথায় বাংলাদেশটাকে যারা ক্ষতির মুখে ঠেলে দিতাছে তাদেরকে আইডেন্টিফাই করে শাস্তিমুলক সমাধান নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমি ডলার এক্সচেন্জ করে থাকি বা রেমিটেন্স আনি বলে কখনো আয়কর দেই নাই আজ পর্যন্ত আমার ফ্রি ল্যান্সার লাইফে। আর আমি বিগত ৯বছর যাবত যে মার্কেটপ্লেসে কাজ করে থাকি সেটাতে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগে না- ভেরিফিকেশন ছাড়াই উপার্জন করা যায় আর শুধু মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করা যায় ইউজারনেম আ ই ডিটা। তবে মার্কেটপ্লেস থেকে উপার্জন উইথড্র করতে হলে আপনাকে অতি অবশ্যই আপনাকে ১৮+ নাগরিক হতে হবে, বৈধ ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে এবং বৈধ পাইওনিয়ার বা পেল্যুশন (যেহেতু রেমিটেন্স উইথড্র দিতে হবে) একাউন্ট থাকতে হবে।আর যে সকল মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে শুধু পেপাল ব্যবহার করে উইথড্র করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশ সরকারের বা ব্যাংকের কোন ক্ষতি হয় নাই। কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে যদি আপনি অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যাংক একাউন্টে( স্ক্রিল/নেটেলার/ওয়েবামনি/পারফেক্টামানি বা গুগল পে) আপনার বাবা বা মায়ের নাম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সে সকল ইন্টারনেট ব্যাংক একাউন্টে আপনার বাবা কিংবা মায়ের নামে অলরেডী ডাটাবেজ তৈরী হয়ে গেছে এবং আপনি যদি সেগুলো থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে উইথড্র দিয়ে থাকেন তাহলে সেই দেশের সরকার, ইন্টারনেট ব্যাংক একাউন্ট এবং বাংলাদেশের সরকারের কাছে তো আপনারা বাবা কিংবা মা কিংবা বড় ভাই এর নামে রেমিটেন্স রেকর্ড তৈরী হয়েছে।এখন তো সরকারের হিসাব মোতাবেক আপনার বাবা কিংবা মা কিংবা বড় ভাই যাদের নামে বিভিন্ন খানে রেমিটেন্স একাউন্ট মেক করেছেন তাদের নামে বাংলাদেশ সরকারের প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় ফ্রি ল্যান্সার আইডি কার্ড ইস্যু করা হবে এবং হয়তো তাদেরকেই মন্ত্রনালয়ে যাইয়া সেই কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। আমি ২০১১ সাল এর পর থেকে সুদীর্ঘ সময় লোকাল বা ইন্টারন্যাশনাল পেপাল ডট কম ব্যবহার করেছি এবং বাংলাদেশে আমার যারা পরিচিত তারা পারস্পরিক লেনাদেনা করেছি বা যে সকল ভঢ় ভাই বোনেরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক তাদেরকে পেপাল ডলার দিয়ে দিয়েছি এবং তারা তাদের ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন ব্যাংক েএকাউন্টে সেগুলো উইথড্র করে নিয়েছেন এবং তাদের জীবন সংসার চালিয়ে গেছেন বা ব্যবসা পাতি করে গেছেন। পেপালের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি কোন লেনাদেনা নাই মানে পেপাল বাংলাদেশ ব্যাংক এ কোন সার্ভিস লেনাদেনা করে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিটেন্স সেকসান ব্যভহার করি নাই পেপাল ডট কম ডলার লেনাদেনার ক্ষেত্রে। পেপাল সম্পর্কিত কোন ধরনরে লেনাদেনা আমার নামে রেকর্ড নাই বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে। তবে যাার পেপাল ডট কমের বিজনেস একাউন্ট তৈরী করে পাইওনিয়ার একাউন্টে দেয়া ব্যাংক ডিটেইলস ব্যবহার কের ব্যাংক অফ আমেরিকার মাধ্যমে বা জার্মানীর কারনে ভেরিফাই হয়েছে আর বাংলাদেশ ব্যাংকে লেনাদেনা করেছে তাদের ফিনান্সিয়াল ডাটাবেজে- পেপাল থেকে পাইওনিয়ার এবং পাইওনিয়ার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যদি রেমিটেন্স লেনাদেনা করে থাকে আর পাইওনিয়ার যদি সকল রেফারেন্স দিয়ে থাকে তাহলে সেটাও ঝামেলা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে কারন সুইফট বা ইটিএস এর কারনে (ETS- Electronics Transaction System ) অনেক সময় ট্রানজেকশন অটোমেটিক হতে পারে তখন - আমেরিকা সেটা টের না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হবে না। এখন সাম্প্রতিককালে দেখেছি অনেকটাই বন্ধ দেখায় বা কাজ করে না পেপালের সাথে পাইওনিয়ার এর লেনাদেনাতে। স্বয়ং আমেরিকান পেপালের সাথে আমেরিকান পাইওনিয়ারের ভেরিফিকেশনও এখন আর নিতাছে না।
বাংলাদেশ বা বাংলাদেশী দুটো ব্যাপারই ভালো থাকুক।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.
#masudbcl