masudbcl is my popular username on internet. I am an affiliate of the world largest seo marketplace : seoclerks. I am a blogger, vlogger, youtuber and pigeon lover. Search Youtube: masudbcl. For my birds or pigeon channel, please search on Youtube: masudbcl pigeon loft or @whitepigeons.
ফ্রি ল্যান্সার/আউটসোর্সিং/মার্কেটপ্লেস জগতে একটি মার্ডার দেখা।
২০১৩ সালের শাহবাগ গনজাগরনে সরাসরি অংশগ্রহন করতে পারি নাই কারন আমি একটু ব্যাকডেটেড ছিলাম। এখনো আমি কিছুটা সেকেলে মাইন্ডের। প্রায় ১ বছর ধরে ভাবতাছি নিজের গিগের ইমেজগুলো পরিবর্তন করবো তাও করা হইতাছে না। আমি খুব সিরিয়াস না হলেও বলতে পারেন মোটামুটি বা শখের ফ্রি ল্যান্সার। গনজাগরনে সরাসরি শাহবাগে অংশগ্রহন না করলেও ময়মনসিংহে আমি শাহবাগ গনজাগরনের পক্ষে কাজ করি- সংঘটিত হবার চেষ্টা করি এবং কিছু কিছু পদক্ষেপে মুভমেন্টে ও করি। তো গনজাগরনের যারা বড় ভাই ব্রাদার তারা বলে যে : তোকে শেষ দিন হলেও থানা শাহবাগে আসতে হবে। আমি ২৫ শে অক্টোবর ২০১২ তে থানা শাহবাগ ছেড়ে ময়মনসিংহে চরে আসি তারপরে আবার ১৪ ই ডিসেম্বর ২০১৩ তে ফিরে আসি। আমার দ্বায়িত্ব ছিলো সারা দেশে একটি বলয় তৈরী করা শাহবাগ গনজাগরনের চতুর্দিকে। সেই হিসাবে গনজাগরনে অংশগ্রহন করার চেয়ে গনজাগরনের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করাতে বেশী ইন্টারেষ্টেড ছিলাম যেনো সারা দেশ থেকে যে সকল ভাই ব্রাদার অংশগ্রহন করেছিলো তারা আবার শান্তিতে বা নিরাপদে তাদের বাসাতে ফিরে যেতে পারে। একেবারে মূল কেন্দ্রে র সাথে যোগাযোগ না থাকলেও গনজাগরন সংক্রান্ত ব্যাপারে ২০১৩ সালের গনজাগরনে অংশগ্রহন করে অনেকেই নিহত হয়। ইন্টারনেটে থেকে তৈরী হওয়া গনজাগরনের সদস্যদেরকে যারা হত্যা করেছে বা যারা মূলে ছিলো বা পেছনে ছিলো আজকে তাদের খুব রমরমা অবস্থা। স্পেশিয়াল কিছু ভাই এর হত্যা মনের মধ্যে গেথে আছে : শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের দীপন ভাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সন্তান অভিজিত দা এবং তেজগাওয়ে সম্ভবত ওয়াসিফুর রহমান বাবু। সবচেয়ে ভয়াবহ মার্ডার বলতে গেলে অভিজিত হত্যা- এখনো তাদের ফাসির দাবী করি। এর তদন্তে আছে এফবিআই।
একজন ফ্রি ল্যান্সারের মূল যে সম্পদ তা হইতাছে তার গ্যাজেটস। আমি ২০১৩ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর থানা শাহবাগ গনজাগরন সভাস্থলে হাজির হই আমার ল্যাপটপ সহকারে। রাজাকার কসাই কাদেরর ফাসির উৎসব এ। ফাসি কার্যকর হবার পরে একটি বিজয় অনুষ্টান হয় সেখানে আমি ল্যাপটপ সহকারে উপস্থিত থাকি। তারপরে ঘোরাফেরার মধ্যে ২০১৩ সালের ১৭/১৮ ই ডিসেম্বর মিরপুর ১২ নম্বর থেকে একটা গুরড় কল আসে- ইন্টারনেটে ফেসবুকের গ্ররপে একটা এড দেখার সূত্র ধরে। তারপরে সেই গ্ররপের সাথে পরিচয় এবং কথা বার্তা। তারা আমার সাথে কথা বার্তা বলে অফার করলো তাদের সাথে থাকার জন্য। আমি ব্যাচেলর মানুষ- তাদের আদর আপ্যায়নে খুশী হয়ে থেকে গেলাম যদিও মেস লাইফ তারপরেও ফ্রি ল্যান্সিং করতে গেলে সংঘ বা প্রেমিকার ভালোবাসা দরকার হয়। সেই সেন্সে থাকা । আমার সাথে ল্যাপটপ থাকার কারন আমি তখন কাজ করি মার্কেটপ্লেসে তবে ইনকাম খুব বেশী হাই ফাই না আবার এতা খারাপও না যে চলতে পারবো না। ঢাকা শহরের একটা মেসে থাকলে সর্ব্বোচ্চ খরচ ৬০০০-১০০০০ টাকা। সেরকম ভাবে সৃষ্টিকর্তা আমাকে সহায়তা করতেছিলো। আমাকে আমার বাসা থেকে কখনোই কোন হাত খরচ দেয়া হতো না। তারা আমাকে তেমন ফাইনানসিয়ালি হেল্প করতো না। তাছাড়া আমি সরকারি প্রজেক্টের চাকুরীও ছেড়ে দিছিলাম।২০০২-২০১১ পর্যন্ত পার্ট টাইম ফ্রি ল্যান্সিং এর পাশাপাশি জব এবং ২০১১ থেকে এখন পর্যন্ত ফুলটাইম করি।
তো মিরপুর ১২ নম্বরে থেকে কাজ শুরু করার পরে আস্তে আস্তে একজন দুজন করে সংগী যোগাড় হওয়া শুরু হয়। মোটামুটি প্রথমে ১ জন, তারপরে ২/৩ জন করে ৫/৬ মাসের মাথাতে আমার গ্ররপের সংগী সংখ্যা দাড়ায় ৪/৫ জন। ২ জন জুনিয়র, ১ জন সিনিয়র আর দুইজন মেয়ে। মেয়েটা যে কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজ থেকে অনার্স/মাষ্টার্স পড়তেছিলো। থাকতো ডেমরাতে। কখনো দেখা হয় নাই। তো আমি লাইক ফর লাইক পয়েন্ট কেনাবেচা করতাম- আমি কিনে ক্লায়েন্টের সোশাল মিডিয়া প্রমোশনের কাজ করতাম। যখন সংগী বাড়তে শুরু করে আর তারা ডিমান্ড করে আমার সাথে কাজ করবে তখণ আমি আমার নেটওয়ার্ক বা পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করি। লাইক ফর লাইকের যারা ওয়ার্কার তারা ৫০% রিয়েল ইমেজ ব্যবহার করতো না। কিন্তু ক্লিকটা হতো রিয়েল এবং আর ইমপ্রেশন টা হতো রিয়েল আর লাইক গুলো আসতো সারা বিশ্ব থেকে। এইটা টেক্সাসের টেক ইউনিভার্সিটির একদল ছাত্রের একটা প্রজেক্ট। সেভাবেই কাজ শুরু করা। প্রথমে সোশাল মিডিয়া প্যানেল থেকে আমার ফেসবুক প্রোফাইলে ৩৫০০ ফ্রেন্ডস এড করি ১০/১২ ডলারের বিনিময়ে। হাই কোর্টের ভ্যাট ট্যাক্স ডিভিশনের একজন আইনজীবি ছিলেন ফ্রি ল্যান্সার- উনার কাছ থেকে কিছু সাজেসনস নিয়ে আবারো কাজ শুরু করি। ক্লায়েন্ট দেরকে ফেসবুকে সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অফার প্রমোট করি- যারা রাজী হতো তারা সরাসরি পেপালে পেমেন্ট করতো আর যারা রাজী হতো না কিন্তু কাজ দিতে রাজী থাকতো তাদেরকে নিয়ে আসতাম মার্কেটপ্লেসে। পেপালের ডলার ঢাকা শহরের যাদের ডলার দরকার ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দিতো তাদের সাথে যাইয়া সরাসরি দেখা করে সেল করে দিতাম। ল্যাপটপ ও নিয়ে যাইতাম অনেকখানে। কোথাও কোন খান থেকে কখনো কোন ডলারের ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসে নাই। পারসোনাল পেপালে ডলার দিতাম উনি সেটা দেখে পরীক্ষা করে নগদ ক্যাশ টাকা দিতো এবং সেটা নিয়ে কাজ করতাম বা যারা ওয়ার্কার তাদেরকে দিয়ে দিতাম। আবার অনেক সময় যে কারো পেমেন্টবিডি একাউন্টে সেলও করে দিতাম। আমাদের দেশের একটা প্রধান সমস্যা অনেকই পেপালকে অবৈধ বলে- অবৈধ হলে তো আর ওয়েবসাইট ওপেন হতো না। পেপালের ওয়েবসাইট যেহেতু ওপেন হয় সেহেতু আপনি যেভাবেই ব্যবহার করেন না কেনো সেটা ষ্ট্রাগলিং ফ্রি ল্যানসিং এর জন্য লিগ্যাল ধরা হয়।
আমার সেই হাই কোর্টের আইনজীবি ছিলো শাহবাগেরই বন্ধু। আমি তার সাথে বেশীর ভাগ সময় শাহবাগে দেখা করতাম। সে ছিলো একজন মেয়ে এবং আমাদের সম্পর্ক টা ছিলো বন্দুর মতোই। ফ্রি ল্যান্সিং এর সূত্রে পরিচয় ২০০৬ সাল থেকে। সে না থাকলও আমি থানা শাহবাগে যাইয়া বসে আড্ডা দিতাম। ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়, বুয়েট এবং ঢাকা মেডিকেল, পিজি হাসপাতাল, বারডেম এর কর্মচাঞ্চল্য ভালো লাগতো। থানা শাহবাগের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সারা দেশের ছেলে মেয়েরা আসতো বসে আড্ডা দিতো এবং লালন চত্বরের লালনের আসর জমতো। আমার ধারনা হয় মিনিমাম ৫ লক্ষ লোকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে থানা শাহবাগের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে থাকার দরুন। তাই মাঝে মাঝে আইসা বসতাম বা মানুষের সাথে পরিচিত হতাম। ভাগ্য গুনে কয়েকজন ফ্রি ল্যান্সার বন্ধুও জুটে গেলো যারা থানা শাহবাগে আড্ডা দিতো। তারা ক্রেইগলিষ্টের মার্কেটিং করতো এবং এখন এডাল্ট ডেটিং নিয়ে কাজ করে এবং তারাও রেমিটেন্স আনে। বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর জানে না কোন কোন কোম্পানী রেমিটেন্স দিতাছে কারন এডাল্ট ডেটিং এর সব কোম্পানীই পাইওনিয়ার বা স্ক্রিল এ পেমেন্ট দিতো। আর সেগুলো লোকালি সেল করা ছাড়াও ব্যাংকেও উইথড্র দেয়া যাইতো। তো প্রথমেই স্মরন করবো সেই বন্ধুমহলের সাথে থেকে অভিজিত হত্যার খবর জানার ব্যাপারে।
২জন ফ্রি ল্যান্সার বন্ধু এডাল্ট ডেটিং এর আর আমার টিমের ৩ জন, আমি , আমার এক ছোট ভাই আর এক বড় ভাই (ডেমরা এলাকার) একুশে বইমেলার চলতেছিলো জয় কালী মন্দির গেটে, আমরা বসেছিলাম টিএসসি গেটের ভেতরে নাট্যমঞ্চে, মুক্তমঞ্চে। যারা সেখানে গেছে বা যাবার অভিজ্ঞতা আছে তারা সকলেই জানে সেখানে ছেলে পেলে রা বসে কি করে? যথারীতি আমারও তাই করতেছিলাম। তার আগে দিনের বেলাতে আমার একটা ডেট ছিলো। আমি আমার ডেট শেষ করে বন্ধুদেরকে কল দিলে থানা শাহবাগে দেখা হবে এরকম একটা সেটআপ করি। সবাই চলে আসলে সন্ধ্যার আগে আগে আমরা সেখানে বসে যাই আরো ৩/৪ হাজার ছেলে পেলে দের সাথে। পুরো নাট্যমঞ্চে অনেক মেয়েও ছিলো। আমরা বসে বসে তাদের মজা দেখতাম অনেক সময়। তারা তাদের বন্দুদের সাথে মজা করতো , চিৎকার চেচামেচি করতো আর সবচেয়ে ভালো লাগতো তাদের ড্যাশিং মুভমেন্ট। সেই হিসাবে ১ থেকে দেড় ঘন্টা মতোন আমরা সেই ২ নম্বর গেট এলাকার নাট্যমঞ্চে বসে আড্ড দেই। আমাদের কারোরই নলেজে ছিলো না যে তখন বইমেলা চলতেছিলো। কারন ইন্টারনেটের যুগে বই কিনে পড়ার মতো কোন অভিজ্ঞতা নাই্ ভালো না লাগলে বসে বসে পিডিএফ বুক পড়তাম। যারা মনিটাইজেশন করে তারা তো আর বই কিনে পড়ে না- একজন আরকেজনের লেখা পড়ে।
তো আমার ৩জন, সেই এডাল্ট ফ্রি ল্যান্সার ২ বন্ধু, আর তাদের আরো ২ বন্ধু এই ৭ জন মিলে সেখানে আড্ডা দিয়ে - সমস্ত সিগারেট শেষ করে টিএসসি এর গেট দিয়ে বের হয়ে আসি- যেখানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতে হতো। আমার পুরো মাথা টাল মাতাল লাগতেছিলো টায়ার্ড এর কারনে। বের হয়েছি প্রায় ২/৩ টার দিকে আর ঢাকা শহরের ধুলো বালি এমনিতেই মানুষকে টায়ার্ড বানিয়ে দেয়। আমরা সাড়ে ৮টা নাগাদ বা তার আরো কিছু পরে হাটতে হাটতে চলে আসি শাহবাগের মোড়ে। তখণ লুংগি পড়া একজন লোক দৌড়ে কাছে আইসা আমাদেরকে বলতাছে: ভাইয়া ভাইয়া এইখানে এইখানে ২ টা হত্যা হয়েছে। মার্ডার । গলা কাটা। আমরা থেমে দাড়াই এবং বলি যে কোথায়? তো উত্তরে বলতাছে এই যে: টিএসসির কাছে। তো আমার উত্তর দিলাম যে: আমরা তো মাত্রই হেটে আসলাম। কিছু দেখলাম না তো কোন রক্ত বা কোন লাশ বা কোন হইচই। তো বলতাছে যে: এই মাত্রই হইছে। তো আমরা উত্তরে বললাম যে: তো আমারে বলতাছেন কেনো? থানা শাহবাগে যান সেখানে পুলিশ আছে তাদেরকে বলেন। আমার ঠিক সেই মুহুর্তে থানা শাহবাগের গেটের উল্টোদিকে দাড়িয়ে ছিলাম। তো বললাম: তো আপনি আমাদের কে বলতাছেন কেনো: থানাতে যান পুলিশকে বলেন। তো বলতাছে সেই লংগি পড়া দোকানদার মে বি: যে সে আমাদেরকে দেখে পুলিশ মনে করেছিলো। তো আমি টাল মাতালের মধ্যেও ভাবতেছিলাম যে: শালায় মনে হয় আমারে ইন্টারপোল ভেবেছে। (!)
তারপরে আমরা শাহবাগ থেকে হেটে হেটে ইষ্টার্ন প্লাজার সামনে হয়ে বাংলামোটর এর মোড়ে চলে আসি। সেখান থেকে বাসে উঠি ৯.১৫ এর দিকে এবং মেসে চলে আসি ১০ টা- সাড়ে ১০ টা নাগাদ। রুমে ঢুকতেই রুমের এক বড় ভাই বলতাছে: মাসুদ ভাই কিছু জানেন? আমি বললাম কি? তো উনি বুঝতে পেরেছে আমি মে বি কিছু শূনি নাই। তো বলতাছে যে: ল্যাপটপ খুলেন এবং সংবাদ পত্র বের করে দেখেন : আপনাদের একজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে (আমি একটু আউট থাকার কারনে ভুলে গিয়েছিরাম যে আমি শাহবাগে একটি হত্যা নিউজ শুনে এসেছি) এবং তার স্ত্রী ও আক্রান্ত। আমি খবর পড়ে বুঝতে পারলাম বিজ্ঞান মনস্ক লেখক ডা: অভিজিত রায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যুক্তরাষ্ট্র এবং তার বাবা ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের শিক্ষক ডা: অজয় রায়। আমি অভিজিতের নাম কখনো তেমন শূনি নাই বা শুনলেও মনে নাই কিন্তু ডা: অজয় রায়ের কথা জানতাম। উনার কিছু কিছু লেখাও পড়েছি। বুঝতে পারলাম উনার বিজ্ঞান মনস্ক লেখা সম্ভবত কেউ পছন্দ করে নাই। তাই সরকারের ছত্র ছায়ায় বসে থেকে তাকে প্রকাশ্য দিবালোকে হাজার হাজার মানুষের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে - কোন লোকজনও তেমন ফেরাতে আসে নাই। তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হইতেছিলো বলে অনেকদিন- পরে পত্রিকা পড়ে জানলাম আর সে তার ছোটবেলার বেড়ে উঠার এলাকায় তাকে কেউ মেরে ফেলাবে এইটা সে বিশ্বাস করতে পারে নাই।
ইন্টারনেট যেমন একটি গতিশীল মিডিয়া তেমনি ঢাকা শহর ও একটি পরিবর্তনশীল দুনিয়া- এই খানে একজন মানুষকে এক সেকেন্ড পরেও আর খুজে পাওয়া যায় না। সিসিটিভির ফুটেজ আছে কারা কারা অভিজিত কে হত্যা করেছে। ঢাকা শহরের প্রানকেন্দ্রে অবিস্থত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে ডা: অভিজিত যাদেরকে বন্ধু ভেবেছে তারা হয়তো সেই সময়ে তাকে আর সেই সাপোর্ট দিতে পারে নাই। তার আগে এবং পরে আরো দুটি মৃত্যু কিংবা খুন আমারে অনেক ভাবাইয়া তোলে: ১) শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের ণীচে থাকা ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের শিক্ষক ডা: আজাদ আবুল কালামের ছেলে প্রকাশক দীপন এবং ২) আরো একজন ভালো মনস্ক লেখক: ওয়াসিফুর রহমান। তাদের লিখিত ব্লগে কোন মনিটাইজেশণ ছিলো না। আমার বাবাও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন এখণ অবসরপ্রাপ্ত। এই দুইটা হত্যাতে আমার কাছে মনে হয়েছে : তারা অভিজিত বা দীপন ভাই কে মারে নাই- তারা বোধ হয় আমাকেই মেরে ফেলেছে। অভিজিত ছোট বেলাতে ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয় আবাসিক এলাকাতে বসবাস করতো কারন তারা বাবা ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কিছুদিন আগে তারা বাবা ডা: অজয় রায় ও মারা গেছেন। এখনো অভিজিতির লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা আছে। যতোদিন পর্যন্ত অভিজিত হত্যাকারী বা প্রধান পরিকল্পনাকারী সহ হত্যাকালীদের ফাসি কার্যকর না হবে ততোদিন পর্যন্ত অভিজিত লাশ কে দাফন বা সমাহিত করা হবে না- এইটা অভিজিতের পরিবারের এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সিদ্বান্ত।
পরের দিন সকালে আমি সম্পূর্ন সুস্থ হই এবং মনের মধ্যে কষ্ট পাই। তার ২/১ টা লেখা পড়ি এবং দেখলাম যে: থানা শাহবাগে বিকালে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। শাহবাগে বিরাট জনসমাগম হয় এবং অনেকখানে অনেক আড্ডা হয়। আমিও সেই আড্ডার মধ্যে থাকি বা অংশগ্রহন করি। ফলে থাদের অনেক খবর আসতো আমার কাছে। সেখানে যাই এবং প্রতিবাদ সভা বা মিছিলে অংশগ্রহন করি। পরে যাইয়া দেখি টিএসসি এর গেটে একটা বিশাল ছবি টাংগানো আছে অভিজিতের। আমি সেই খানে যাইয়া একটু থাইমা যাই কারন পত্রিকাতে দেখলাম লিখেছে ৩ নম্বর গেট তথা জয় কালী মন্দির গেটে হত্যা হইছে অভিজিত কিন্তু শাহবাগের লোকজন মোমবাতি জালাইতাছে ২ নম্বর গেটে। পরে আমিও একটা মোমবাতি জালিয়ে তার প্রতি শেষ শ্রদ্বা নিবেদন করলাম এবং সেখান থেকে হেটে হেটে ফিরে আসলাম।সেই প্রতিবাদ সভাটা আয়োজন করার ব্যাপারে পরে পত্রিকাতেও ছবি আসে অনেক।
ইন্টারনেটে বাংলা লেখা বা ব্লগ লেখা কোন অপরাধ না। বাংলাদেশে এমন কোন আইন নাই যে: ইন্টারনেটে বসে বাংলা লিখা যাবে না বা ব্লগ লেখা যাবে না। আইনে আছে: ইন্টারনেটে আপনি দেশ, জাতি, ধর্ম বিরোধী কিছু লিখতে পারবেননা। মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কিনে নিজের মনের চাহিদা পূরনের জন্য। কারো যদি বাংলা লিখতে ভালোবাসে সে লিখবে। কারো যদি ব্লগ লিখতে ভালোবাসে সে লিখবে। এই ব্যাপারে আদালতের ও কোন এখতিয়ার নাই কাউকে বাধা দেবার জন্য। আদালত শুধূ অপরাধীর বিচার করতে পারে- কারো ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আমার এখনো বিশ্বাস হয় না: যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা: অভিজিত কোন ধরনের খারাপ কিছু লিখতো। কারন দীপন একজন প্রকাশক ছিলো: তাকে যারা হত্যা করে তার মেইন মোটিভ ই ছিলো যে: তাকে ধর্মবিরোধী বই প্রকাশ করতে বলা হয়েছিলো- সে করে নাই্ আরো একজন ছিলো লালমাটিয়ার প্রকাশক তিনিও রাজী হন নাই্। তাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। অভিজিত যে নিজে সেই ব্লগ লিখতো বা নিজে লিখে যে বই প্রকাশ করেছিলো এইটা আমার বিশ্বাস না হবার কারন : আমি নিজেও বিশ্ববিধ্যালয়ের শিক্ষক পরিবারের সন্তান। আমাদের একটি আলাদা সমাজ ব্যবস্থা আছে যেখানে খুব ভালো করে ধর্ম কর্ম শিক্ষা দেয়া হয়। আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে যে: অভিজিতের সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল হ্যাক করা হয়েছিলো, তার নামে মিথ্যা বা বানোয়াট ব্লগ লেখা হয়েছিলো এবং শাহবাগ গনজাগরনের কর্মী হবার কারনে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে ইভেন তার নামের বইও অন্য একজন লিখে তার নামে প্রকাশ করা হয়েছে বলে আমার সন্দেহ হয়। কারন আমরা জানি বিশ্ববিধ্যালয়ে শিক্ষক পরিবারের সন্তানেরা কেমন হয়। আদর্শ আর নৈতিকতার স্বাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিবারের কোন সন্তান কোন খানে তাদের নৈতিকতা বিকায় না- পারহেপস আমি কখনো দেখি নাই। আমার বাবা সুদীর্ঘ ৪৫ বছর শিক্ষক ছিলেন আর আমিও কখনো ২ নম্বরি বা জোচ্চুরি করি নাই আমার লাইফে।
তারপরে র কথা তে আসি। আমি যে রুমে বসে থেকে অভিজিতরে হত্যার খবর ইন্টারনেটে সংবাদপত্রে বসে পড়ি সেখানে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। একই বিল্ডিং এর অন্য পাশে আরো একটি ফ্লাট খালি হয় এবং সেখানে মুভ করার চেষ্টা করি। ঠিক সে সময়ে অল্প পরিচিত একজন আইসা জুটে আমার গুরপের বা টিমের সাথে। তার মেস ছিলো অন্য আরেকপাশে বিল্ডিং এ। তার রুমে একদিন বা ২ দিন একজন বান্ধবীর সাথে ডেট করার দরুন সে চেপে বসে এবং সে বলে যে তাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে আর্থিক সাহায্য করা বন্ধ করে দিছে। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনাও ঠিক নাই। সে তার বিশ্ববিধ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করতে পারতাছে না। তাকে কাজ শিখানোর জন্য এবং তাকে কিছু কাজ দেবার জন্য্ কাজ শেখার জণ্য সে আমাকে টাকাও অফার করতে চাইলো। তো আমি বললাম: এই ধরনের ব্যাপার স্যাপার তো বাংলাদেশে চালূ নাই্ কাউকে ফ্রি ল্যানসিং কাজ শিখিয়ে টাকা নেবার কোন উপায় নাই। তো আমার সাথে যারা টিম মেম্বার তারা বললো যে ভাই: এই লোকটাকে নিয়েন না। তার এক চোখ পাথরের- আরেক চোখ এতোদিনে নষ্ট হয়ে যাবার কথা মানে অন্ধ ঘটিত প্রবলেমে। এই কথাটা বলার পরে তাকে কিছু কাজ দেখানোর ইচ্চা পোষন করি। তাকে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে টানা আটটি মাসে ৪ লক্ষ টাকার মতো কাজ দেই এবং তা পেমেন্টও করি। কারন আমার মনে স্থির ধারনা ছিলো; সে প্রাইভেট বিম্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়তো একসময় টাকা ফেরত দেবে।
পরে দেখলাম তার রুচি অনেক ডাউন। প্রথমেই দেখলাম যে গার্মেন্টস এর পঞ্চম শ্রেনী পাশ মেয়েদের সাথে ছাদে বসে টাংকি মারে। ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে নাই। মিরপুরের পুরোটা জুড়েই গার্মেন্টস । আমি সতর্ক হওয়া শুরু করে। মার্কেটপ্লেস থেকে তাকে আমি ১ টা কি ২ টা কাজ দেই কিন্তু বেশীর ভাগ সময়ে আমার সোশাল মিডিয়া বন্ধুদের সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ করতো।আমি আস্তে আস্তে সতর্ক হওয়া শুরু করি। গার্মেন্টস এর মেয়েদেরকে আমি অবজ্ঞা করতাম না। তাদের সাথে আমিও হাই হ্যালো বলতাম কিন্তু আমি একটা লিমিটেশন বজায় রাখতাম। আমার দ্বিতীয় যে খারাপ লাগাটা হয় সেটা হলো: আমার টিমের প্রথম যে মেম্বার সে একাবরে গ্রাম থেকে আসা অনেক সহজ সরল মানুষ- সে যাকে পছন্দ করে সেই মেয়েকে এই এক চোখ অন্ধটা বিরক্ত করে। ফলে টিমের প্রধান সদস্য টেনশনে পড়ে যায় এবং আমি বুঝে ফেলি যে: আমার এই টিমটা টিকবে না। কারন ফ্রি ল্যান্সিং কখনো কনট্রাডিকশন (Contradiction) এর মধ্যে হয় না। তৃতীয়ত: একদিন ভোর বেলাতে সে আমার ল্যাপটপ এবং মোবাইল চুরি করে বসে। মেসের সকল সদস্য ঘুমে থেকে এবং সে মেসের দরজা খুলে ছাদের সাথে লাগোয়া দরজা খুলে ছাদে বসে চোরকে ইনষ্ট্রাকশন দিতাছিলো আর একদম ফজরের আজানের টাইমে দারোয়ানের খোলা দরজা দিয়ে (তখণ সবাই নামাজ পড়তে যায় মসজিদে) তার দেখানো পথে চোর আইসা ল্যাপটপ এবং মোবাইল আমার কানের কাছ থেকে নিয়ে যায়। আমি যখন ঘূমাতাম তখণ ল্যাপটপ আর মোবাইল আমার মাথার পাশেই থাকতো। আমি পুরো হতভম্ব এবং থ হয়ে যাই। মনে মনে বলি চোর নিয়ে কি আর ফ্রি ল্যান্সিং করা যায়।
আশে পাশে খোজাখুজি শেষ করে সকাল হলে থানাতে যাই আমার সেই প্রথম সদস্য এবং এই চোর কে নিয়ে। থানার ওসি বলে জিডি লিখে নিয়ে আসেন। আমি বাহিরে যাইয়া জিডি লিখে নিয়ে আসার প রে বলতাছে: চোর আপনার চেনা জানা। আপনি কি চোরের নাম দিবেন জিডিতে নাতি সবাইকে সন্দেহের তালিকাতে রাখবেন। আমি বললাম: সেখানে সবাইকে সেন্দহের তালিাকতে রাখেণ। থানার ওসি বললো: জিডি করতে বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রাগবে। এই একটা কথা শুনে আমি এতো খুশী হলাম যে: আমার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর তো দিলামই সাথে আরো ২০০ টাকা দিলাম চা খাবার জন্য্ উনি টাকা নিতে চায় নাই- তো আমি বললাম ডলার কে ক্যাশ করা টাকা। আপনি চা খাইয়েন। তো উনি বললেন: যে আপনার মোবাইল নাম্বারট খোলা রাখবেন। আমি ওকে বলে চলে আসলাম। সেই ল্যাপটপে আমার মিনিমাম ১৫০০ কমপ্লিটেড প্রজেক্টের ডাটা রয়ে গেছে। প্রথমে একটা মোবাইল কিনলাম অল্পদামে। তারপরে সীমগুলো রিপ্লেস করলাম। খুব দ্রুততার সাথে ফেসবুক এবং মার্কেটপ্লেসের একাউন্ট ডিটেইলস গুলো পরিবর্তন করলাম এবং তারপরে আবার শুরু করার জন্য একটা ল্যাপটপ কেনার চিন্তা করলাম। বিকাশে থাকা সকল টাকা উইথড্র করলাম। তারপরে বাকী টাকা দার দেনা করে আবারো একটি ল্যাপটপ কিনে ফেলাইলাম। সেই মুহুর্তে অনলাইনে থাকা সারা বিশ্বের আমার সকল বন্ধুরা জেনে গেলো : ঢাকা শহর থেকে আমার ল্যাপটপ এবং মোবাইল চুরি হয়ে গেছে। হতভম্ব হয়ে গেছে অনেকে এবং প্রশ্ন করলো যে তোমরা কিভাবে কাজ করো বা করবা?
আমি ১৯৯০ এর গনজাগরন আন্দোলনের সৈনিক। রাজাকার (ফাসি) বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত। হঠাৎ করে এক তালিকাগ্রস্থ রাজাকার (ফাসি ) দেখলাম সেই এলাকাতে- মিরপুর ১২ নম্বরে। যুদ্বের সময়ে সে মিরপুরে ১১ নম্বর থেকে বাংগালী জবাই করতো বলে শুনেছি। মিরপুর কামরাংগীরচর আর ময়মনসিংহ পর্যন্ত তার নেটওয়ার্ক ছিলো। তাকে দেখে আমার সেই এলাকাতে থাকার রুচিই নষ্ট হয়ে গেলো তাও দেখলাম মসজিদে ঢুকতাছে। আমার কষ্টার্জিত ডলার কে ক্যাশ করা টাকা আমি যে মসজিদের দানবাক্সে ফেলি সেই মসজিদে রাজাকারের (ফাসি) (খুবই চিকন প্রকৃতির লোক) প্রবেশ দেখে আমি সেখানে থাকার টোটাল ইন্টারষ্টে হারিয়ে ফেলি। চিন্তা করি সেই এলাকা ছেড়ে দেবো। সম্ভবত আমার ধারে কাছের কিছু লোক বুঝেও ফেলে। একটা এলাকা থেকে তোর আর হঠাৎ করে বের হওয়া যায় না । তাই সুযোগ খুজতেছিলাম যে কিভাবে সেই এলাকা ছাড়া যায়। এর মধ্যেই আমার যে প্রথমে টিম মেম্বার সবচেয়ে ভালো সে: একদিন সন্ধ্যায় আইসা আমার কাছে কান্নাকাটি করতাছে। খুবই ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। মাঝে মাঝে দেখেছি মন খারাপ করে থাকতে। আর যা উপার্জন করতো সব খরচ করে ফেলাইতো আমার সাথে। দুজনে বিভিন্ন খানে ঘুরে বেড়াতাম। আর খুব ভালো কাজও জানতো। দিনাজপুর, জয়পুরহাট, পটুয়াখালী বিভিন্ন খানেও গেছি।
সেই ছেলে যখন কান্নাকাটি করতাছে তখন তাকে ভালো ভাবে জিজ্ঞাসা করাতেও কোন উত্তর দিলো না। মিরপুর থেকে কাছাকাছি একটা রাস্তা দিয়ে এয়ারেপোর্টের যেখানে বিমান নামে সেখানে যাইয়া বইসা আছে দেখলাম। সে যখন কান্নাকাটি করে সন্ধ্যায় তখণ আমি ৭ তালাতে একা নতুন নেয়া ফ্লাটে বসে কাজ করতেছিলাম। নি:শ্চুপ ছিলো এবং আমি গভীর মনোযোগেই কাজ করতেছিলাম। একটু ধাপাধাপি বা পাছড়াপাছড়ি শুনেছি কিন্তু আমল দেই নাই। ভেবেছি হয়তো কেউ কোন ভারী জিনিসপত্র তুলতাছে। সেই ছেলেকে এয়ারপোর্ট থেকে ধরে নিয়ে আসি আমি এবং একজন ক্রিকেটার রংপুর থেকে আসা :তারপরে ১২টা থেকে সাড়ে ১২ টা নাগাদ ফ্ল্যাটে চলে আসি এবং এসে ঘুমাইয়া পড়ি। সেইভাবেই থাকতো ল্যাপটপ আর মোবাইল। কারন আমি জানি চোর আর দ্বিতীয় বার চুরি করবে না। ঘুম ভাংগে পরদিন দুপুর পৌনে দুইটায় এবং একজন গার্মেন্টস কর্মী পুরুষ আইসা বলে যে : ৬ তালাতে একটা সুইসাইড হয়েছে। আমি একটু হতভম্ব এবং থ হয়ে গেলাম এবং নীচে যাইয়া দেখলাম, একটা মহিলা ঝুলতাছে ফ্যানের সাথে। আমার কাছে খূব বেশী পরিচিত মনে হলো না। পুলিশ আসলো এবং লাশ তুলে নিয়ে গেলো। যেই মহিলার বাসাতে এ ঘটনা ঘটেছে তারে জিজ্ঞাসা করলাম : বললো যে: এইখানে আর কোন অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয় নাই। লাশ নেবার সময়ে পুলিশের সাথেও দেখা হলো। ঢাকা মেডিকেল থেকে লাশ ফেরত আসার পরে লাশবাহী গাড়ি ও দেখলাম তার গ্রামের বাড়িতে রওনা হবার অপেক্ষায় আছে। গ্রামের বাড়ি বলেছিলো বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতির আশে পাশের কিশোরগঞ্জ গ্রামে। তারপরে প্রায় ৩৮ দিন ছিলাম সেই এলাকাতে। পুলিশ আমাকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করে নাই। আমি নিজে থেকে নিজের সেফটি এবং সিকিউরিটির কারনে ডিএমপি কে ছদ্মনামে সবকিছু জানিয়ে একটা ইমেইল করে দিলাম।
তারপরে আর সেই এলাকাতে কিভাবে থাকবো? সেই টিম মেম্বারই একদিন বিট্রে করে একটি ঘোট পাকিয়ে ফেললো সেই বছর ৩১ শে ডিসেম্বরের আগে ভাগে: কিছু লোক গায়ে হাত তুললো। সেই সময়ে বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন আইনের পুলিশ ভাড়াটিয়া আইনের ফরম ফিলাপ করতে বললো পুলিশ সবাইকে ঘোষনা দিয়ে। আমিও সেই ফরম খুজতে যাইয়া একটা ভয়াবহ বিপদের মধ্যে পড়ে গেলাম। তারা আমার গায়ে হাত তুললো আর আমি মনে মনে ভাবলাম পুলিশের আইন কার্যকর করতে যাইয়া কিছু মাইর খাইলাম - আশা করি বাংলাদেশ পুলিশই একদিন ব্যাপারটাকে সলভ করে দিবে। গায়ে হাত তোলার আগে মিরপুর ডিওএইচএস এর কিছু লোকজন ২০,০০০ টাকা চাইলো এবং বললো যে: ২০,০০০ টাকা দিলে ছেড়ে দিবে। আমি বললাম যে: ২০,০০০ টাকা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। তারপরে তারা কিছুটা কিম্বুত উপায়ে আমাকে ঝাড় ফুক করলো- মহিলারা যে রকম ডাল রান্না করার সময়ে ডাবুর দিয়ে ঘোটায় সেরকম একটা কাঠের দন্ড দিয়ে। ঠিক কোন ধর্ম মোতাবেক ঝাড় ফুক করলো তা ঠিক বোঝলাম না (পরে ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারীতে আমি চট্রগ্রাম যাই আন্দরকিল্লা লালখান বাজার এলাকাতে এবং সেখানে যাইয়া ঘুমাইয়া পড়ি। দেখলাম এক হুজুর আমার গায়ে হাত রেখে আমাকে ঝাড় ফুক করে দিতাছে এবং বুঝলাম আমি পূর্বের বিপদ থেকে বেচে যাবো। একটা সন্দেহ থেকে যায় বের হয়ে আসার পরে: আমি যেদিন আন্দরকিল্লা মসজিদে যাই সেদিন ছিলো শুক্রবার। স্পেশিয়াল কারন বশত সেদিন হাইকোর্ট থেকে রায় আসে বাংলাদেশ মুসলিম দেশ। তখন একটা মেয়েকে দেখলাম লালখান বাজারে ঘোরাগহুরি করতে যাকে আমি মিরপুর ১২ নম্বর বাজারেও দেখেছি। ব্যাপারটা টিক ঠাহর করতে পারলাম না) । পরে সেই হাই কোর্টের আইনজীবির সাথে সব কিছু শেয়ার করলাম এবং তাকে নিয়ে একদিন সেখানে গেলাম। সেই বিল্ডিং এর ম্যানেজার তা দেখে ভাবলো যে: আমি আবারো রুম ডেটিং করতে এসেছি এবং সে প্রচন্ড ক্ষেপে গেলো। শালাদের আচরনে যা আছিলো সব কিছু মিলে থানা শাহবাগের বড় ভাইদের কে জানালাম। তখন তারা সেখানে ২/৩ বার যাইয়া আমার ল্যাপটপ, কাপড়ে চোড়প, চেয়ার টেবিল যা ছিলো তা একদম কাছের ছোট ভাই মনে করে সবকিছু নিয়ে আইসা ডেমরাতে এক বাসাতে তুলে দিলো। বিরাট কষ্ট করেছেন সেই বড় ভাই। এতো অমায়িক মানুষ আমার লাইফে আমি আর কখনো দেখি নাই। আমার লাইফে বড় সড় সামর্থ্য হলে আমি উনাকে বড় সড় একটি গিফট দেবার চেষ্টা করবো। তখন পুলিশ প্রধান ছিলো আমার পরিচিত। সে আবার বোধ করি আমার আব্বাকে পুরো ব্যাপারটা জানায়। আমার বাবা নিজে জিনিস টা একাবার ভেরিফাই করে। বলে যে: উনি আমাকে নিয়ে মিরপুর ১২ নম্বর এ একবার যাবে। ডিএমপি ক েবলেন: আমি যদি দোষী হই তাহলে যেনো আব্বার চোখের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়। আমার আব্বা পরিচিত একজনের বাসাতে বেড়াতে যায় । আমি আধাঘন্টা থাকি এবং আব্বার কথা মতো মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ( একজন বাযার ৪ মাস আমার কাছ থেকে এফিলিয়েট প্রোডাক্ট কিনে ফলে ১০০ ডলার জমা হয় এবং সেটা দিয়ে একটি স্যামসাং মোবাইল কিনি) এবং আব্বার সাথে মিরপুর ১ এ যাইয়া দেখা করি। তারপরে আমার আব্বা বুঝে যে: আমি কোন হত্যা বা কোন খারাপ কাজের সাথে জড়িত নাই।
তার আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে সেই এক চোখ কানা (যে আমার কাছ থেকে কাজ শিখেছিলো) আমাকে ফেসবুকে বিনা কারনে (তার বলে টাকার হিসাব মিলে না্- তাকে মার্কেটপ্লেসের একাউন্ট ও খুলে দিয়েছিলাম) আমাকে জবাই এর থ্রেড দিয়ে বসে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ফেসবুক মেসেন্জারে । আমি তো পুরোপুরি থ। যারে ফ্রি কাজ শিখালাম, ৭/৮ মাস কাজ দিলাম - বিকাশ রেকর্ড আছে ৩/৪ লক্ষ টাকা দিলাম- সে বলে আমাকে মাইরা ফেলাবে (সৃষ্টির ও তো একটা নিয়ম আছে)]। সাথে সাথে শাহবাগের সেই বড় ভাই এবং তার বন্ধুদেরকে জানালাম : বললো যে: একবার তো থানাতে জিডি এন্ট্রি করেছোই। শুধূ ডিএমপি কে জানাইয়া রাখো। পরে ডিএমপি তে সেটার স্ক্রিনশট নিয়ে একটা ইমেইল করে জানাইয়া রাখলাম।আর আব্বাকেও জানালাম। বললো টেনশন কইরো না। তাকে আমরা জেলে ভরবো। সব শেষে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ময়মনসিংহে বাসাতে চলে আসলাম, বিগত কয়েক বছর যাবত বিল্ডিং এর কাজও কমপ্লিট করতাছি, আর পাশাপাশি ফ্রি ল্যান্সিং কাজও করতাছি। আর ৩ টা ফ্ল্যাটের কাজ বাকী আছে। এরই মধ্যে করোনারি শুরু। কিছুদিন আগে আমার ফেসবুক একাউন্টে লগইন করা যাইতেছিলো না। তখন বুঝতে পারলাম বিশ্বের যে কোন আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিণী আমার ফেসবুকের সকল তথ্য ডাউনলোড করে নিছে। সাধারনত গোয়েন্দা পুলিশ রা বিভিন্ন ওয়ার্ড লিখে সার্চ দেয় এবং সেরকম তথ্য না পাইলে একাউন্ট ফেরত দেয়। আমিও যথারীতি ফেরত পাইলাম। এখণ সেই তথ্য সেই গোয়েন্দা পুলিশ বা আন্তর্জাতিক পুলিশের কাছে। না জানি কি হয়। আমি ২০১৮ থেকে ব্লগ লিখতাছি। আমার অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করতাছি। আগেও লিখতাম ইংরেজীতে। ২০১১ সালে সেটা অফ হয়ে যায় এবং ২০১৭/২০১৮ সালে সেটা আবার ফেরত পাই যেটা এতোক্ষন আপনি পড়লেন।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.
#masudbcl