ইউটিউবে যদি আপনি মনিটাইজেশন করতে যান তাহলে আপনাকে প্রথমে অডিয়েন্স নিয়ে ভাবতে হবে। আপনি যদি কখনো মঞ্চনাটক দেখে থাকেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে অডিয়েন্স কাকে বলে? আপনি পুরো ১০-১৫ দিন রিহার্সেল করে ১০-১৫ জনের একটা টিম নিয়ে একটি মঞ্চ নাটক তৈরী করলেন আর সেটা কেউ দেখতে আসলো না- তাহলে সেটার অডিয়েন্স হবে জিরো। আমার মনে চাইলো আর আমি ভিডিও বানানো শুরূ করে দিলাম ব্যাপারটা সেরকম না। কারন আপনাকে অতি অবশ্যই অডিয়েন্স নিয়ে ভাবতে হবে যে সারা দেশে আপনার অডিয়েন্স কারা? ধরেন: সারা দেশে ২ কোটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন আছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন মানে বোঝেন তো- বেসিকালি তারের লাইন এবং আনলিমিটেড কানেকশন। বাংলালায়ন বা কিউবি সেগুলো দিয়েও ওয়্যারল্যাস ব্রডব্যান্ড কানেকশন চলে। এই ২ কোটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশনের মধ্যে অফিস আদালত বা ইউটিউব বিমুখ বা দেখতে সময় পান না এরকম লোকের সংখ্যা ধরেন ১ কোটি। আর মোবাইলে ইন্টারনেটে আপনি ভিডিও বানালে সেটা দেখবে এরকম কোন গ্যারান্টি নাই। কারন একজন মোবাইল ইন্টারনেট ইউজার যে কিনা গিগাবাইট কিনে ব্যবহার করে চলে সে কি পুরো সময় নিয়ে আপনার বাংলা ভিডিওটি দেখবে। তাহলে আপনি ভিউয়ার পাবেন কি করে?
আপনাকে আসলে আন্তর্জাতিক ভাবে বিবেচনা করতে হবে আপনার অডিয়েন্স বানাতে হবে সারা বিশ্বের ৬০০ কোটি মানুষকে যারা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যারাই হোক বা যে কোন ভাবেই হোক আপনার ভিডিও কোথাও না কোথাও ভিজিট হবে যদি আপনি ইংরেজীতে ভিডিও বানান। আমাদের দেশের আনাচে কানাচে বা কোনা কাঞ্চিতে এখনো কিন্তু ব্রডব্যান্ড এভেইলেবল হয় নাই। এই দেশে এখনো ১০ কোটি মানুষকে ইন্টারনেট র আওতায় আনা যাবে শুধূ দরকার অমায়িক সততা আর চুরি বাটপারি বা দুর্নীতি না করা। সারা দেশের সাধারন মানুষ ইন্টারনেটের ব্যবহার এর ব্যাপারে জানতাছে। কিন্তু আপনার বাংলা ভিডিও এর কন্টেন্ট ভিউয়ার শুধূ বাংলাদেশ এবং ভারত বা বাংলাদেশী এবং ভারতীয় বাংগালী। আপনি যখন আপনার ভিডিও তে হেয়ায়াইট হ্যাট এসইও করবেন আর আপনি যখন ইংরেজীতে ভিডিও বানাবেন সারা বিশ্বের জন্য তাহলে কিন্তু সেটা সারা বিশ্বের অডিয়েন্স ধরবে। ল্যাংগুয়েজ লিমিটেশন না থাকার কারনে ইউটিউব নিজেও আপনার ভিডিও কে প্রমোট করবে। আর এভাবে আপনি আপনার কাংখিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন। আপনি যদি সোশাল মিডিয়া এক্সচেন্জার বা সোশাল মিডিয়া প্যানেলের সাহায্য নেন ভিউজ বাড়ানোর জন্য ইউটিউবের ডেভেলপার বা এনালাইজার প্রোগ্রাম সেটা জানতে পারবে এবং আপনার ভিডিও এর উপরে আসা এড ভ্যালূ কমাইয়া দিবে (এডভার্টাইজার পলিসি) এবং এতো পরিমান কমাইয়া দিবে যে দেখা যাবে যে: আপনার ৩ মিলিয়ন ভিউজ এর ফলে আসবে ২ সেন্টস (সেদিন দেখলাম একখানে)। পার ১০০০ ইমপ্রেশণ এর যে ভ্যালু সেটাও আপনার একাউন্টে এড হবে না কারন তারা আমার আপনার চেয়ে অনেক বেশী চালাক।
আপনার অডিয়েন্স যদি সারা বিশ্ব থেকে আসে তাহলে আপনার ভিডিও টি ক্রমাগত ভিউয়ার জেনারেট করবে। আর আপনার অডিয়েন্স যদি হয় শুধু বাংলাদেশী তাহলে আপনাকে নানা ধরনের কাহিণী কসরত করতে হবে। নানা ধরনের ফন্দি আটতে হবে আর বাংলাদেশী মানুষেরা আপনার ভিডিওটি দেখবেও কম। কারন প্রথমত বাংলাদেশের খুব কম মানুষই ফুল টাইম ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর বড় সড় জায়ান্ট টিভিতে ইউটিউব ছাড়লেও সেটা বাফারিং করে। মোবাইলেও বাফারিং কম হয়। তাহলে ইন্টারনেটের গতি যদি কম হয় তাহলে এতো পরিমান ভিউয়ার বা ভিজিটর আসতাছে কোথা থেকে? কেউ না কেউ তো কোথাও না কোথাও কারো সাথে - আমার আপনার সাথে প্রতারনা করতাছে ( আপনি যদি ভিউজ কিনে থাকেন আর সেগুলোর ভিজিটর হয় সারা বিশ্বের লোক [এপিআই এর কল্যানে] তারা তো আর বাংলা কন্টেন্ট দেখে আপনার অডিয়েন্স হবে না)। আমরা একবার জরিপ করেছিলাম আইএসপির ডাটা এবং তথ্য অনুসারে - সারা দেশের ৬৪ জেলা সদরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন আছে বাসা বাড়িতে প্রায় ১৫ লক্ষ। এছাড়াও আরো সেখানে ব্যবহার করে ওয়াইফাই রাউটার বা মডেমের মাধ্যমে- সব মিলিয়ে ৫০ লক্ষ। আরো ধরি বিগত ৫ বছরে বেড়েছে ৫০ লক্ষ। তো আশা করা যায় সারা দেশে ১ কোটি ইউজার বা ব্যবহার কারী আপনার অডিয়েন্স। অন্তত সারা বিশ্বে আপনার অডিয়েন্স আছে প্রায় ৫০০ কোটি +। তাহলে আপনার ভিডিও টা যদি সেই রকম মানের হয় তাহলে আপনি অডিয়েন্স পাবেন সারা বিশ্ব থেকে।
পয়েন্ট এবং ক্রেডিট উপার্জন করে টাকা বা ডলার উপার্জন করা যায় বিধায় সারা দেশের ছেলে বা মেয়ে সোশাল মিডিয়া এক্সচেন্জ এ কাজ করতাছে এবং সেখানে যদি আপনার ভিডিও টি ভিজিটর করান তাহলে সেখানে আপনি খুব বেশী আগ্রহ জেনারেট করতে পারবেন না। কারন তারা ভিডিও দেখে পয়েন্ট বা ক্রেডিট উপার্জনের জণ্য যা সেল করে তাদের পকেট খরচ বা হাত খরচ চলে। তাহলে রিয়্যাল অডিয়েন্স এইখানে মার খায়। আপনাকে আপনার ভিডিও সারা বিশ্বে পপুলার করার জন্য আপনাকে হোয়াইট হ্যাট এসইও বা ইউটিউব এসইও এর সাহায্য নিতে হবে। এছাড়া আপনি আপনার ভিডিও সারা বিশ্বে পপুলার করতে পারবেন না। সারা দেশের অনেক ছেলে এবং মেয়ে হঠাৎ করে একজন আরেকজনকে উপকার করা ছেড়ে দিয়ে ভিউজ কেনা বেচা শুরু করে এবং ধারনা করা যায় বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায় - বলা যায় একপ্রকার হঠাৎ করে বড়লোক হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের ই কমার্স আইনে এব সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দন্ডবিধির আইনে ইন্টারনেটে যদি আপনার কোন ই কমার্স মার্চেন্ট একাউন্ট না থাকে তাহলে আপনি কারো কাছে টাকা চাইতে পারবেন না। লোক ঠকানোর মাধ্যমে যদি আপনি বড়লোক হতেও পারেন তারপরেও আপনি কি প্রকৃত সম্মান নিয়ে বাচতে পারবেন। লোক আপনাকে গালি গালাজ করবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে ১০০ দেশের বা ১০০ জাতের লোক বসবাস করে। এইখানে একজন মানুষ দেখতে একেকরকম। ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতে তারা দেখতে একই রকম। ফলে তাদের পেনডেমিকের ভ্যাকসিন তৈরী করতে তেমন সময় লাগে নাই কারন তাদের দৈহিক বা গঠনগত বৈশিষ্ট্য একইরকম। আর আমাদের দেশে বলতাছে আরো ছয় মাস ভ্যাকসিন আসতে আসতে। তারপরেও এক ধরনের গঠনগত বৈশিষ্ট্য যদি এটি কাজ করে তাহলে আরেক ধরনের বৈশিষ্ট্যে সেটা কাজ নাও করতে পারে।
আপনাকে এতো মিলিয়ন ভিউজ দেবে বা তো মিলিয়ন ভিউজ দেবে বলে আপনার কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতাইয়া নিছে তারা রাষ্ট্রীয় ভাবে অপরাধী। ফেসবুকের একটা আলাদা সেকসান আছে যার নাম মার্কেটপ্লেস। ফেসবুকের সেই মার্কেটপ্লেস বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস। কিন্তু সেটা ইউরোপিয়ান বা আমেরিকানদের জন্য। বাংলাদেশে তো ফেসবুকের মার্কেটপ্লেস চালূ নাই। কিন্তু মানুষজন সমানেই দেদারসে ফেসবুকে টাকা চাইয়া যাইতাচে বা ভিউজ এর জন্য বা নানা ধরনের প্যাকেজ চলতাছে। অনেকেই বলে থাকতো: যতো ভিউজ ততো টাকা্। মানে আপনি যতো পরিমান ভিুউজ নিবেন আপনাকে ততো পরিমান টাকা খরচ করতে হবে আমার পারসোনাল কাজে অনেক সময় আমি ভিউজ কিনে ব্যবহার করি। আজকে রেট দেখেছি: ১০০০ ভিউজ: ১.২০ ডলার মানে ১০০টাকার মতোন (আমি কখনো কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভিউজ বেচি নাই। আমি আমার সারা বিশ্বের ক্লায়েণ্টদের জন্য মাঝে মাঝে ইউটিউব ভিউজ সেল করে থাকি যার পেমেন্ট নেয়া হয় ডলারে। এখন আপনি যদি কোথাও মিলিয়ন ভিউজ এর অর্ডার দেন আর হাজার প্রতি ১০ সেন্ট ও বেশী লাগে তাহলে ১০০ হাজারের জন্য ১০ ডলার। আর ১০ লাখ ভিউজ এর জন্য প্রায় ১০০ ডলার লাভ। আবার এইখানে মনিটাইজেশন যদি থাকে তাহলে আপনার আরো কিছু উপার্জন হতে পারে। কিন্তু সময়ের যে ক্রেজ যে আমার এতো ভিউজ বা আপনার এতো ভিউজ- আপনি কি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবেন যে আপনার ভিউজ গুলো কোথা থেকে এসেছে। ইউটিউব কি আপনাকে দেখাইতাছে যে কোথা কোথা থেকে ভিউজ আসতাছে? এক শ্রেনীর মানুষ যারা নিজ দেশের মানুষের মধ্যে এই ধরনের ব্যবসা পাতি করে যাইতাছে তাদের প্রজন্ম কে বলা হয় দেশবিরোধী (ফাসি), দালাল (ফাসি) এবং রাজাকার (ফাসি) প্রজন্ম। ইন্টারনেটে তাদের একমাত্র ভুমিকাই হইতাছে সাধারন বাংগালী ছেলে বা মেয়েদের ক্ষতি করে যাওয়া, ব্রেইনটাকে ড্যামেজ করে দেয়া যেনো বাংগালী আর কখনো সোজা হয়ে না দাড়াতে পারে- সেই চক্রান্ত যা চালূ আছে ১৯৭২ সাল থেকে এদেশের মুক্তি সেনাদের কাছে শতরু বাহিণী পরাজতি হবার পর থেকে একই চক্রান্ত চালূ আছে। আর তাদের কে সহযোগিতা করতাছে আমাদের দেশের প্রশাসনের একটা অংশ নয়তো তারা তো বাংলাদেশে বেচে থাকার কথা না।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.
#masudbcl